বাংলাদেশের তাঁত শিল্প: একটি ঐতিহ্যের ইতিহাস ও বিবর্তন

Aug 09, 2024
History
বাংলাদেশের তাঁত শিল্প:  একটি ঐতিহ্যের ইতিহাস ও বিবর্তন

বাংলাদেশের তাঁত শিল্প:  একটি ঐতিহ্যের ইতিহাস ও বিবর্তন

তাঁতের ইতিহাস বাংলাদেশের শিল্প জগতে সবচেয়ে গৌরবউজ্জ্বল ইতিহাসের একটা। প্রাচীনকাল থেকে বাংলাদেশ যে কারণে পৃথিবীতে বিখ্যাত সেটা হল তাঁতশিল্প। বাংলা ভূখণ্ড-মূলত ঢাকা পরিচিতই হয়েছে তাঁতের কারণে। সুলতানি মুঘল আমলেই  তাঁতের কাজ দারুন উৎকর্ষে পৌঁছেছিল। প্রচলিত অর্থে বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরনো এবং বৃহত্তম শিল্প হল তাঁত শিল্প।বাংলাদেশের তাঁত শিল্প তাঁত শিল্পীরা আমাদের ঐতিহ্যের ধারক বাহক।এই শিল্পের সাথে জড়িত আছে এদেশের সংস্কৃতি। বাংলাদেশের তাঁত শিল্পের ক্রম-বিবর্তনের ইতিহাস নিয়ে নানা মত রয়েছে তবে এই শিল্পের ইতিহাস অনেক প্রাচীন, এই নিয়ে কোন দ্বিমত নেই। সাত শতকের চৈনিক বৌদ্ধ তীর্থযাত্রী হিউয়েন-সাং (হুয়ানসাং) তের শতকের খ্যাত পর্যটক ইবনে বতুতা’র ভ্রমণ কাহিনীতে এবংউনিশ শতকের বিখ্যাত গবেষক জেম্স ওয়াইজ এর গবেষণায় বাংলার বস্ত্র তাঁত শিল্পের উল্লেখ রয়েছে। এই দিকগুলো বিবেচনা করে বলা যায় এই বাংলার তাঁত শিল্পের ঐতিহ্য অতি প্রাচীন এটি আমাদের হাজার বছরের ঐতিহ্য, কৃষ্টি সংস্কৃতি।

তাঁত শিল্পের উদ্ভব সঠিক কবে থেকে এসেছে তার খোঁজ এখনো আলো-আঁধারের মধ্যেই রয়ে গিয়েছে। ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায় যে, আদি বসাক সম্প্রদায় এর তাঁতীরাই হলেন আদি তাঁতী। এরা আদিকাল থেকে প্রধানত তাঁত বুনে আসছে। এই পোশাক শিল্পের সাথে যুক্ত মানুষরাতন্তুবায় বা তাঁতী নামে পরিচিত। এরা প্রধানত যাযাবর শ্রেণির অন্তর্গত ছিলো। প্রথমে এরা সিন্ধু উপত্যকায় অববাহিকায় বসবাস করতো কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে তারা সেই স্থান পরিত্যাগ করে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে এসে তাঁতের কাজ শুরু করে। আবহাওয়া প্রতিকূলতার কারণে পরে তারা রাজশাহী অঞ্চলে চলে আসে। তাঁত শিল্পের ইতিহাস থেকে জানা যায় যে, মনিপুরে অনেক আগে থেকেই তাঁত শিল্পের কাজ আসছে। মনিপুরীরা মূলত নিজেদের পোশাকের প্রয়োজনে তাঁতের কাপড় তৈরি করতো। তাদের তৈরি তাঁতের সামগ্রী পরবর্তীকালে বাঙালি সমাজে খুবই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

কুটির শিল্প হিসেবে হস্ত চালিত তাঁত শিল্প ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের পূর্বকালে কেবল দেশেই নয় বর্হিবাণিজ্যেও বিশেষ স্থান দখল করেছিলো। বংশ পরম্পরায় দক্ষতা অর্জনের মধ্য দিয়ে বয়ন উৎকর্ষতায় তাঁতিরা সৃষ্টি করেছিলো এক অনন্য স্থান। আরো কথিত আছে হিন্দু তাঁতীদের মৌলিক উপাধিই ছিল বসাক আর মুসলিম কারিগর বা তাঁতীদেরকে বলা হতো জোলা। রাজশাহী, টাংগাইল, সিরাজগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লাসহ আরও অন্যান্য অঞ্চলেও বসাক, যূগী বা দেবনাধ সহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের তাতিঁরা তাতঁ শিল্পের প্রসার ঘটায়।

আদিকাল থেকে ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে চলে আসা আমাদের তাঁতশিল্প দেশে বিদেশে সমভাবে সমাদৃত। এই অঞ্চলে উৎপাদিত ফুটিকার্পাস এর কারনে একসময় হাতে কাটা সূক্ষ্ম সুতা হত এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে হস্তচালিত তাঁতের কাপড় বোনা হত। সুলতানি মোগল যুগের উত্তরাধিকারী হিসাবে এখানকার তাঁতিদের বৈশিষ্ট্য সম্পূর্ণ আলাদা এক সময় এদের পূর্বপুরুষরাই মসলিন, জামদানি মিহিসুতি বস্ত্র তৈরি করত। দিল্লির মোগল দরবার থেকে বৃটেনের রাজপ্রাসাদ পর্যন্ত এই মসলিনের কদর ছিল বেশ। বাংলার জগদ্বিখ্যাত মসলিন সারা বিশ্বে বাংলার গৌরব বৃদ্ধি করেছিল।এখনো দেশের তাঁত শিল্পীদের তৈরি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাওয়েঁর ঐতিহাসিক জামদানী, রাজশাহীর রেশমী বা সিল্ক, টাঙ্গাইলের শাড়ি, কুমিল্লার খাদি বা খদ্দর, সিরাজগঞ্জের লুঙ্গী গামছা, ঢাকার মিরপুরের বেনারসি, সিলেট মৌলভীবাজারের মনিপুরি তাতঁ বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙামাটির তাতেঁর রয়েছে বিশ্ব ব্যাপী চাহিদা কদর।

তুলা বা তুলা হতে উৎপন্ন সুতা থেকে কাপড় বানানোর বিশেষ ধরণের যন্ত্র হচ্ছে তাঁত বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের তাঁত দেখা যায়, হাতে বহনযোগ্য খুব ছোট আকারের তাঁত অথবা বিশাল আকৃতির তাঁত ছাড়াও মনিপুরি বিভিন্ন নৃ-গোষ্ঠিদের কোমড়ে বাধাঁ তাঁত দেখা যায়। সাধারণত তাতেঁ সুতা কু-লী আকারে টানটান করে ঢুকিয়ে দেয়া থাকে। যখন তাঁত চালু করা হয় তখন নির্দিষ্ট সাজ অনুসারে সুতা টেনে নেয়া হয়। তাঁতেরআকার প্রকার অনুযায়ী এর কলা কৌশল বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। বাংলার তাঁত যন্ত্রে ঝোলানো হাতল টেনে সুতো জড়ানো মাকু বা স্পিন্ডাল আড়াআড়ি ছোটানোহয়। তাতিঁ পাড়ায় দিন-রাত শোনা যায় মাকুর মনোমুদ্ধকর খটখট শব্দ। সূতো কাটার চরকা তাতিঁদের প্রত্যেক পরিবারেই থাকে এবং পুত্র-কন্যাসহ পরিবারের নারী-পুরুষসবাই সূতোকাটা কাপড় বুনতে পারদর্শী। গভীর মনোসংযোগের সাথে দরদ দিয়ে,অত্যন্ত সুক্ষ ভাবে তাতিঁরা দিন রাত কাজ করে। দক্ষ কারিগররা তাদের বংশ পরম্পরায় তৈরি করছেন নানা জাতের কাপড়। তাঁতিরা তাঁতের শাড়ি, কাপড়, লুঙ্গি, গামছা, ক্ষৌম, মশারী চাদর তৈরি করে থাকে। সচরাচর পুরুষেরা তাঁত বোনে,আর বাড়ির মহিলারা চরকা কাটা, রঙকরা অন্যান্য কাজে তাদের সহযোগিতাকরে তাঁতিরা মনের মাধুরী মিশিয়ে নানা ডিজাইন বা নকশা আঁকে। এই তাঁতশিল্প অনেক পুরোনো একটা ঐতিহ্যের ধারায় চলে। জ্ঞান নিষ্ঠাছাড়া এই কাজ করা যায়না। তাঁতী বা কারিগরদের শিল্পীমনা হতে হয়। আমাদের এক- একজন তাতিঁ, এক একজন শিল্পী, তাইতো আমাদের তাঁতশিল্পের এতো সুখ্যাতি।

সুপ্রাচীকাল থেকে সিরাজগঞ্জের শাড়ি দেশের ঐতিহ্য, কৃষ্টি সংস্কৃতিকে ধারণ করে আসছে। সিরাজগঞ্জের দক্ষ কারিগরেরা বংশানুক্রমে শাড়ি তৈরী করছেন। বিখ্যাত পর্যটক ইবনে বতুতা হিউয়েন সাঙের ভ্রমণ কাহিনীতে সিরাজগঞ্জ টাঙ্গাইলের শাড়ির কথাটি উল্লেখ রয়েছে। তাঁতিরা ঠিক কবে থেকে সিরাজগঞ্জ টাঙ্গাইলে শাড়ি তৈরি করছেন সে ইতিহাস সঠিকভাবে অজানা থাকলেও অঞ্চলের শাড়ির একটি ঐতিহ্য চলমান রয়েছে। বসাক শ্রেণীর তাঁতপল্লীর তাঁতিরা বংশানুক্রমে হাজার বছর ধরে শাড়ি তৈরি করে চলেছেন। এখানকার তাঁতিরা শুধু সুতি সুতাকে উপজিব্য করে নিজের দক্ষতায় তৈরি করেন তাঁতের শাড়ি, যা বেশ আরামদায়ক, মার্জিত রুচিশীল। এখানকার শাড়ির প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো পাড় বা কিনারের কাজ। তবে ৯০ দশকে এখানকার শাড়ি তৈরিতে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়। সে সময় তৈরি কটন শাড়ির পাশাপাশি সফটসিল্ক হাফসিল্ক শাড়ি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়।

সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে যুগোপযোগী নকশায় এখন তাঁতের শাড়ি তৈরি হচ্ছে। একটি শাড়ি তৈরি করতে কী পরিমাণ পরিশ্রম করতে হয়, এর সাথে তাঁতের শাড়ির পরতে পরতে সংশ্লিষ্টদের কী পরিমাণ মমতা জড়িয়ে আছে, সে কথা আজও অনেকের কাছে অজানা। তাঁতে তৈরি শাড়ি যেকোনো নারীর ব্যক্তিত্ব প্রকাশে সক্ষম। সময়ের সাথে পরিবর্তিত অবস্থায় আধুনিক নারীর রুচি, পছন্দ বৈচিত্র্যের পরিবর্তন ঘটেছে। সেই সাথে সংগতি রেখে তৈরি হচ্ছে কারুকার্যখচিত আধুনিক নকশাসমৃদ্ধ তাঁতের শাড়ি। দেশের শাড়ি পোশাকের সিংহভাগ পূরণ করছে সিরাজগঞ্জের তাঁতের তৈরি শাড়ি পোশাক। বিদেশীরা ক্রয় করছেন সিরাজগঞ্জের তৈরি তাঁতের শাড়ি। শুধু বাঙালি বধূ ললনাদের পরিধানের বস্ত্র হিসেবে নয়, বিভিন্ন উৎসবে কিংবা ব্যক্তিগত উপহার হিসেবে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশীদের কাছেও আকর্ষণীয় উপহার হিসেবে স্থান করে নিয়েছে যমুনার পাড়ে তৈরি নজর কাড়া তাঁতের শাড়ি। উপহার হিসেবে দেয়া হয় তাঁতের শাড়ি।

অর্থনীতিতে ভূমিকাঃ

বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনীতিতে তাঁত শিল্পের ভূমিকা অপরিসীম। হস্ত চালিত তাঁতে বছরে প্রায় ৭০ কোটি মিটার বস্ত্র উৎপাদিত হয় যা অভ্যন্তরীণ চাহিদার প্রায় ৪০ ভাগ মিটিয়ে থাকে। এ শিল্প থেকে মূল্য সংযোজন করের পরিমাণ প্রায় ১৫০০.০০ কোটি টাকা। বাংলাদেশের হস্ত চালিত তাঁত শিল্প এদেশের সর্ববৃহৎ কুটির শিল্প। সরকার কর্তৃক সম্পাদিত তাঁত শুমারী ২০০৩ অনুযায়ী দেশে বর্তমানে ৫ লক্ষাধিক হস্তচালিত তাঁত রয়েছে ।। দেশের মোট কাপড়ের চাহিদার শতকরা প্রায় ৭৫ ভাগ যোগান দিচ্ছে তাঁত শিল্প এবং প্রায় ৫০ লাখ লোক সরাসরি এই শিল্পের সাথে জড়িত রয়েছে । শুধুমাত্র মনিপুরীরা ২০০৯ সালে ২২ লাখ টাকার যুক্তরাজ্যে তাদের রপ্তানি শুরু করে এবং ২০১০ সালে এর পরিমাণ দাঁড়ায় ৩১ লাখ টাকায়। ২০১২ সালে প্রায় অর্ধ কোটি টাকার মণিপুরী কাপড় যুক্তরাজ্যে রপ্তানি করা হয়েছে ।

সমস্যা

আধুনিক প্রযুক্তির উন্নতির ফলে বিদ্যুতের সাহায্যে চালিত পাওয়ারলুম চালু হলে এর মাধ্যমে কাপড় তৈরি শুরু হলেও হস্তচালিত তাঁত পাওয়ারলুমের সমন্বয় তাঁত শিল্পকে অনেকটা সমৃদ্ধ করেছে। এর মাধ্যমে কাপড়ের পাড়ে মনোমুগ্ধকর সব নকশা করা হচ্ছে। মূলত পাড়ের নকশার ওপর ভিত্তি করে কাপড়ের সৌন্দর্য ফুটে ওঠে এবং কাপড় আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। তবে কালের বির্বতনে তাঁতের শাড়ির নকশা এখন অনেকটাই আধুনিক হয়ে একদিকে যেমন অভিনবত্ব এসেছে, তেমনি চমত্কারিত্ব গুণে-মানে হয়েছে খুবই উন্নত।

কিন্তু নানা প্রতিকূলতায় অনেকটা বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে তাঁত শিল্প। আবহমান বাংলার তাঁতের শাড়ি দেশের কুটির শিল্পের অন্যতম একটি উপকরণ হওয়া সত্ত্বেও বিভিন্ন অসুবিধার কারণে ঐতিহ্যবাহী তাঁত শিল্প এখন প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম.  

 সুতার, রঙ, রাসায়নিকের  মূল্য বৃদ্ধি ও বিপননে অনিয়ম,দক্ষ শ্রমিকের অভাব, ডিজাইনের অভাব, উন্নত প্রযুক্তির অভাবে আধুনিক চাহিদার সাথে তাল মিলিয়ে মানসম্মত প্রয়োজনমতো পোশাক তৈরি করা যাচ্ছে না। তাঁত শ্রমিকদের সময়োপযোগী কোনো প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় গতানুগতিক সনাতন পদ্ধতিতে পোশাক তৈরির ধারার বাইরে এসে আধুনিক রুচিসম্মত পোশাক তৈরি করতে কষ্ট হচ্ছে। এছাড়া মূলধনের সমস্যা তো রয়েছেই। তাঁত শিল্পে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা একেবারেই কম। পৃষ্ঠপোষকতা নজরদারির অভাবে ঐতিহ্য হারাতে বসেছে তাঁত শিল্প। সরকারিভাবে মোটা অংকের ঋণপ্রাপ্তির কোনো সুযোগ না থাকায় দাদন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণ গ্রহণ করতে হচ্ছে তাঁত মালিকদের। মূলধনের  অভাবে অনেক তাঁত এরই মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে।    

বিশ্বায়ন ক্রমবর্ধমান যান্ত্রিকআগ্রাসনে তিলেতিলে তলিয়ে যাচ্ছে আমাদের প্রাচীন হস্তনির্ভর দেশীয় তাতঁশিল্প। আধুনিক বস্ত্র কারখানা গুলোতে স্বয়ংক্রিয় তাঁত ব্যবহার করা হয়। আধুনিক উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে আধুনিক বস্ত্র কারখানাগুলোতে কাপড় তৈরীতে সময় শ্রম কম লাগে, ডিজাইন মানে ভালো, দামেও সাশ্রয়ী, তাই বস্ত্রের বাজারে রয়েছে তাদের আধিপত্য। আমদানিকৃত রকমারী কাপড়ের প্রতি বিশেষ অনুরাগের কারনেও দেশীয় হস্তচালিত তাঁতশিল্পের চাহিদায় কিছুটা ভাটা পড়েছে।

এই অসম প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা হস্তচালিত তাঁতশিল্পের জন্য এক কঠিনপরীক্ষা। এর জন্য প্রয়োজন সঠিক পৃষ্ঠপোশকতা ব্যবসায়ী পরিকল্পনা সরকারী-বেসরকারী সহযোগিতা। আরও প্রয়োজন দেশীয় তাঁত বস্ত্রের মানউন্নয়ন, পেশাগত শিক্ষা উন্নত প্রশিক্ষণ। এই পরিবর্তিত আধুনিক রুচিবোধের সাথে সমন্বয় সাধন, দক্ষ কারিগর তৈরী, দেশীয় তাঁতশিল্পের জন্য সময়ের দাবী।বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড আইন-২০১৩এই শিল্পের উন্নয়ন সম্প্রসারণে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। দেশীয় প্রাচীন তাঁতবস্ত্রের বিচিত্র নকশা, আমাদের নিজস্ব রং প্রস্তুত প্রণালী এবং তাঁত সংক্রান্ত বহু প্রয়োজনীয় তথ্য বিশ্লেষণ এখনও অপ্রতুল। এইসব বিভিন্ন সংকট সম্ভাবনার কথা বিবেচনা করে বাংলাদেশের তাঁতশিল্প নিয়ে প্রতিনিয়ত নানা গবেষণা চলছে। বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী তাঁতশিল্পের সনাতনী নকশাগুলোকে পুন:ব্যবহার নিয়ে কাজ করছে অনেক প্রতিষ্ঠান। জনসাধারনের দেশীয় বস্ত্রের প্রতি ভালোবাসা, আবেগ বোধ জাগ্রত করার মাধ্যমে এই অসম প্রতিযোগিতায় দেশীয় তাঁতশিল্পের অবস্থান সুদৃঢ় করা সম্ভব। সরকারী-বেসরকারী পৃষ্ঠপোশকতায়, বস্ত্র তাতঁশিল্পী সহ দেশী-বিদেশী গবেষক এবং সকলেরআন্তরিক চেষ্টা সাধনায় দেশীয় ঐতিহ্যের তাঁতশিল্প মন্দা কাটিয়ে ফিরে পাবে তার হারানো অতীত এটাই আজকের প্রত্যাশা।


Citation:  

Prepared by: Md. Jahidul Islam| Digital Marketer

InstagramLinkedInFacebook